Skip to main content

একটি আম গাছের গল্প


 একটি আম গাছ


পৃথিবীর সমস্ত জীবই চাই,তার মতো জীবের জন্ম দিতে। আমাদের গ্রামের বড়োরাস্তার পাশে একটা আমগাছ ছিল।আমার মনে হয় তারও সেরূপ ইচ্ছা ছিল।
    গাছটাকে আমি ছোটোবেলা থেকেই দেখছি।অনেক মোটা,অনেক লম্বা ও অনেক শাখা-প্রশাখা যুক্ত।
    প্রতিবছরই গাছটাতে মুকুল আসত। আর মুকুল এলেই গাছটা ভাবত,এবার তার ইচ্ছা পূরন হবে।মুকুল থেকে আম, আম থেকে বীজ আর সেই বীজ মাটিতে পড়ে তার সন্তান, অর্থাৎ একটা আম গাছ জন্মাবে। 
    মাঘ মাসের প্রায় শেষ।মুকুল থেকে আমের বোল এসেছে।গাছটা ভগবানকে ধন্যবাদ জানিয়ে,বেশ খুশি মেজাজে ডালপালা দোলাতে ব্যাস্ত।এমন সময় একটা ঢেলা গাছটার ডালপালায় আযাত করে আমের বোল গুলিকে মাটিতে ফেলে দিল।
    গাছটাতে আমের বোল এলেই,স্কুলের ছলেরা স্কুলে যাবার সময় ও স্কুল থেকে ফেরার সময় গাছে ঢেলা মেরে আম পাড়ত।গাছের মালিক অনেক চেষ্টা করেও তা আটকাতে পারত না।
    আম গুলো যত বড়ো হতে লাগল ছলেদের সংখ্যাও তত বাড়তে লাগল। এখন শুধু স্কুলের ছলেরা নয়,আরো অনেকে ঢেলা মেরে বা সরাসরি গাছে উঠে আম পাড়ে।
    একদিন গাছের মালিক দেখল,যেকটি আম অবশিষ্ট আছে,সেগুলি বড়ো হয়েছে এবং আচার দেওয়ার উপযুক্ত। মালিক ভাবল ছলেদের যা জালাতন,আর কদিন গাছে আমগুলো থাকলে,একটা আমও পাবোনা।তাই সে দুটো ছেলেকে ডেকে গাছের সমস্ত আম পাড়িয়ে নিল।গাছটা অনেক কাকুতি-মিনতি করলো,কিন্তু কেউ শুনতে পেলনা।এভাবে প্রতি বছরই গাছটাতে আম ধরত।আর আম গুলোকে ছিনিয়ে নেওয়া হতো।
    গাছটাতে তো আর একটাও আম রইল না।তা হলে কী করে বীজ উৎপন্ন হয়ে তা থেকে চারাগাছ জন্মাবে। গাছটা ভাবল এবছর যাক,"আসছে বছর আমি সফল হবোই। "
    একদিন দেখলাম গাছটা কাটা হচ্ছে। জিঙ্গেসা করে জানলাম জায়গাটা বিক্রি হয়ে গেছে।এখানে বাড়ি তৈরি হবে।
    গাছটার দিকে তাকাতেই আমি আশ্চর্য হয়েগেলাম।একবার মনে হল গাছটা যেন ব্যার্থতার যন্ত্রনায় ভুগছে।আবার পরক্ষনেই মনে হল গাছটার ডালপালায় যেন একটা ঘৃণারা ছাপ রয়েছে। 

                                       

Comments

Popular posts from this blog

একটা গোলাপ গাছের কথা

A sad Rose tree একদা এক সময় এক গভীর জঙ্গলের মধ্যে একটি গোলাপ গাছের চারা বেড়ে উঠছিল। গোলাপ গাছ সাধারণত বাড়ির বাগানে,নার্সারিতে অথবা বাড়ির ছাদে সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য লাগানো হয়। কিন্তু এক সময় এক ব্যক্তি একটি গোলাপ গাছ কে তার স্বাধীনতা উপলব্দি করানোর জন্য তার বাড়ির বাগান থেকে তুলে একটা গভীর জঙ্গলে গাছটি রোপন করেছিল। গাছটির চারপাশে ছিল অনেক বৃক্ষ গাছ যা গাছটিকে রোদ ঝড় জল থেকে রক্ষা করত। গাছটি সঠিক তাপমাত্রা বেড়ে উঠতে লাগলো।গাছটি যখন ডালপালা ছেড়ে সুন্দরভাবে একটু বেড়ে উঠলো তখন গাছটির মনে ইচ্ছা হল যে "আমার ফুল কত দামী কত সুন্দর আমার মত একটা দামি ফুলের গাছ এই ঘন জঙ্গলের মাঝে মানায় না আমি যদি কোন বাড়ির বাগানে অথবা ছাদে বেড়ে উঠতাম তাহলে আমার জীবনটা ধন্য বলে মনে করতাম। গাছটা এই চিন্তায় সারাদিন মগ্ন থাকত। এবং সর্বদা নিজের থেকে অন্য গাছেদের ছোট বলে মনে করত। এই ভাবেই তার দিনগুলো কাটছিল অহংকার এবং উদাসীনতা নিয়ে।হঠাৎ একদিন ফরেস্ট অফিসার রা জঙ্গল পরিক্রমণ করতে এলো। তখন এই গোলাপ গাছটি এক অফিসারের চোখে পড়ল । সে ঐ গোলাপ গাছটিকে যত্নসহকারে বাড়িতে নিয়ে গিয়ে তার বাড়ির ছাদে একটা টবের...

বিশ্বকবি রবি ঠাকুর

Rabindranath Tagore                                                                                     সবাই বলে ‌‌ জ্ঞানের ঠাকুর নামটি তোমার রবি তাই তো তুমি জগৎ জুড়ে সবার বিশ্বকবি । গ্রামের নামটি জোড়াসাঁকো তোমার জন্মভূমি , ধন্য তোমার লেখার আবেগ দুই বিঘা জমি ।। তোমায় বর্ণন করতে গিয়ে ছন্দ ভুলি আমি , তোমাকে লেখার ক্ষমতা থাকা নয় কি অনেক দামী ? তুমি লিখেছো হাজার কবিতা , হাজারো প্রবন্ধ , গান , " শেষের কবিতা   " সোনার তরী " আর লিখেছ " প্রাণ " । " পৃথ্বীরাজএর পরাজয় " তুমি লিখেছিলে ছোট্ট রবি , তাই তো ত...

সমাজ মেলা

  বর্তমানের সমাজ মেলা  ভালো মন্দ কত খেলা সেই খেলা তে আমার ভাগ  সব ঘটলেও কিছুটা থাক ।।নানা রঙের দিন শুরু হয় ভোরের পাখির গানে , ভ্রমর এসে গান গেয়ে যায়  ফুলের কানে কানে  হালকা হাওয়ায় ভেসে এসে, ফুল কে ভ্রমর বলে  কেনো তুমি ঝরে পর সমাজ পদ তলে ? ভ্রমর কে ফুল হেসে বলে একটা কথাই জানায়,, ভালো মন্দের সমাজ মেলায়  কেউ বা থাকে কেউ বা নাই।।